এবার দ্বিতীয় যুদ্ধ শুরু

বারাক ওবামা খুব বিরক্ত। সামনে নির্বাচন। তরুণদের সামনে বক্তব্য রাখতে হবে। পরিসংখ্যানের পেপারটা হাতে। মার্কিন তরুণরা ৭০ শতাংশ ভোটে অংশগ্রহণ করেন না। আর রাজনীতিতে আগ্রহ নেই ৬০-৬২ শতাংশের। ওবামা বক্তব্যে বললেন, ‘তোমরা দেশের স্বার্থে একজন প্রতিনিধিকে ভোট দিতে পারো না।’ আসলে এর কোনো উত্তর সে দেশের তরুণদের কাছে নেই।

আমাদের এই উপমহাদেশে চারটি ব্যাপারে মানুষের ভরপুর আগ্রহ। প্রথমটি, বিয়ে এর পর নির্বাচন, তৃতীয় ক্রিকেট আর চতুর্থ হচ্ছে সিনেমা। বিপত্তি হলেও সত্যি প্রতি চার বছর পর বিশ্বকাপ ঘরের দরজায় কড়া নাড়ে। আর তখন এই চার পৈতৃকসূত্রে পাওয়া নেশা কর্পূরের মতো উবে যায়। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এই বিশ্বকাপ জ্বরে আক্রান্ত হয় মানুষ আরও এক মাস আগে থেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তো বটেই পাড়া-মহল্লা, অফিস, পার্ক সবখানেই বিশ্বকাপের আলোচনা। কপাল

ভালো জাতীয় নির্বাচনের সময় এই বিশ্বকাপ আসর পড়েনি। তা হলে কী হতো কে জানে! গাজীপুরে সম্প্রতি মেয়র নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনী প্রচার থেকে শুরু করে কোথাও তেমন উত্তাপ নেই। সবাই আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। জাতীয় কোনো ইস্যুই এ মাসে গুরুত্ব পাচ্ছে না। বিশ্বকাপ মানুষকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে তারা সব ভুলে গেছে। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে কী হবে কে বলতে পারে! বিশ্বকাপ আসলে উন্মাদনা থাকে। এবার ফেসবুকে এটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ট্রল করা। এ নিয়ে গ-গোল ঝামেলা কম হয়নি।

বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বের খেলা শেষ। ৩২টি দল এসেছিল এক বুক আশা নিয়ে। এর মধ্য থেকে ১৬টি দল ঝরে পড়ল। এই ১৬টি দলের সঙ্গে সমর্থকরাও এসেছিলেন। রাশিয়াকে দেখে মনে হচ্ছিল বিশ্বকাপে সব মানুষের মেলা। হতাশা নিয়ে এই সমর্থকরাও বাড়ি ফিরে যাবেন। গ্রুপপর্বের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিদায় নেওয়া। এই বিদায় জার্মানি তো বটেই পুরো বিশ্বই মানতে পারছে না।

এ ছাড়া অন্য দুই হট ফেভারিট শেষ ষোলোয় উঠেছে। ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিয়েছে। আর্জেন্টিনার একটু বেগ পেতে হয়েছে। এখন শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ফ্রান্স, ওদিকে ব্রাজিল খেলবে মেক্সিকোর সঙ্গে। সব মিলিয়ে এই বিশ্বকাপ অনেক গোল আর পেনাল্টি দেখিয়েছে গ্রুপপর্বে। অনেক রোমাঞ্চের দেখা মিলেছে। হালের সেরা ফুটবলার রোনালদো, মেসি ও নেইমার গোল পেয়েছেন। শেষ ষোলোয় তাদের দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে ১৬ দল টিকে গেছে। এবার কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার লড়াই; নকআউট পর্ব। এর মানে হারলেই বাদ। এখান থেকে ৮টি দল যাবে পরের পর্বে। তার পর সেখান থেকে ৪টি দল টিকবে। আর সব শেষে ফাইনালের জন্য দুটি লড়াই করবে।

অনেক আবেগ, কান্না-হাসি ও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স হয়েছে। আরও রোমাঞ্চের ডালা নিয়ে অপেক্ষা করছে পরের পর্ব। আজ থেকেই শেষ ষোলোর লড়াই শুরু হচ্ছে।